১৬ বছর বয়সেই এনআইডি কার্ড পাওয়া যাবে : যেভাবে আবেদন করবেন

কত বছর বয়সে এনআইডি কার্ড করা যায়? ১৬ বছর বয়স হলেই আপনি অনলাইনে আবেদন করে আইডি কার্ড পেতে পারেন। কিভাবে করবেন? জানুন বিস্তারিত।

আগে শুধুমাত্র ১৮ বছর পূর্ণ হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) করা যেত। কিন্তু এখন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (EC) নতুন নিয়মে জানিয়েছে — যাদের বয়স ১৬ বছর বা তার বেশি, তারা চাইলে এনআইডি নিবন্ধন করতে পারবে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে অনেক শিক্ষার্থী, যারা বিদেশে পড়তে যায়, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে চায়, বা চিকিৎসার কাজে বিদেশে যেতে হয় — তারাও এখন সহজেই এনআইডি পেতে পারবে।

নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ ২০২৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এক ব্রিফিংয়ে জানান,

“যাদের বয়স ১৬ বছর হয়েছে, তারা নিবন্ধন করতে পারবে। এতে ইসি আগাম তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে এবং তারা এনআইডি পাবে। ১৮ বছর হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় যুক্ত হবে।”

কারা ১৬ বছর বয়সে এনআইডি করতে পারবে

নিচের শর্তগুলো পূরণ করলে আপনি ১৬ বছর বয়সেই এনআইডি নিবন্ধন করতে পারবেন:

  • আপনার বয়স ১৬ বছর বা তার বেশি কিন্তু ১৮ বছরের কম।
  • আপনি বাংলাদেশি নাগরিক ও আপনার স্থায়ী ঠিকানা বাংলাদেশের যেকোনো জেলায়।
  • জন্ম সনদে সঠিকভাবে জন্ম তারিখ ও তথ্য আছে।

এনআইডি করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

এনআইডি নিবন্ধনের জন্য সাধারণত যেসব কাগজপত্র লাগে, এগুলো হলো:

  • ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • পিতা-মাতা বা অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র
  • এসএসসি সনদ/ রেজিস্ট্রেশন কার্ড
  • ঠিকানার প্রমাণ, যেমন বিদ্যুৎ বিল বা হোল্ডিং ট্যাক্স কপি

এগুলো ছাড়াও অনেকের ক্ষেত্রে আরও কিছু কাগজপত্র লাগতে পারে। বিস্তারিত দেখতে পারেন এই ব্লগে – ভোটার আইডি কার্ড করতে কি কি লাগে।

নতুন এনআইডি করার আবেদন করবেন যেভাবে

১৬ বছর বয়স হলেই অনলাইনে এনআইডি নিবন্ধন আবেদন করা যায়। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করলেই আপনি সহজে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

ধাপ ১: নতুন নিবন্ধন আবেদন শুরু করুন

প্রথমে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারের ব্রাউজার থেকে ভিজিট করুন https://services.nidw.gov.bd । এখানে “নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন” বা “আবেদন করুন” বাটনে ক্লিক করুন। এই ওয়েবসাইট থেকেই নতুন ভোটার আইডি বা এনআইডি নিবন্ধনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।

ধাপ ২: নতুন ভোটার আবেদন ফরম পূরণ করুন

একাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে, লগইন করে “Profile” অপশন থেকে বিভিন্ন তথ্য পূরণ করে আবেদন শুরু করুন। এখানে ধাপে ধাপে নিচের তথ্যগুলো পূরণ করতে হবে:

  • ব্যক্তিগত তথ্য (নাম, জন্মতারিখ, পিতা-মাতার নাম ও এনআইডি নম্বর)
  • বৈবাহিক অবস্থা, স্বামী/স্ত্রীর নাম (যদি প্রযোজ্য হয়)
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, ধর্ম
  • বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা
  • কোন ঠিকানায় ভোটার হতে চান তা নির্বাচন করুন

ধাপ ৩: কাগজপত্র আপলোড ও আবেদন জমা দিন

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপি বা ছবি আপলোড করতে হবে। সব তথ্য ভালোভাবে যাচাই করুন। সব কিছু ঠিক থাকলে “Submit” করুন।

আবেদন জমা হলে একটি Application ID পাবেন — এটি সংরক্ষণ করুন। আবেদন ফর্মটি ডাউনলোড করে A4 কাগজে প্রিন্ট নিন এবং স্থানীয় নির্বাচন অফিসে জমা দিন।

ধাপ ৫: আবেদন যাচাই (Verification)

আপনার আবেদনটি উপজেলা বা জেলা নির্বাচন অফিস যাচাই করবে। প্রয়োজনে তারা ফোনে যোগাযোগ করতে পারে তথ্য নিশ্চিত করতে।

ধাপ ৬: বায়োমেট্রিক প্রদান

যাচাই সম্পন্ন হলে আপনাকে অফিসে গিয়ে ছবি ও আঙুলের ছাপ (Biometric Information) দিতে হবে। সাধারণত ১০–১৫ দিনের মধ্যে আপনার আবেদন অনুমোদিত হয় এবং তখন আপনি অনলাইন থেকে এনআইডি ডাউনলোড করতে পারবেন।

অনলাইন আবেদনের বিস্তারিত প্রক্রিয়া ছবিসহ দেখুন এখানে – নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

FAQs

১৬ বছর বয়স হলে ভোটার হওয়া যাবে।

না, সাধারণ নিবন্ধনের জন্য কোনো ফি লাগে না। তবে দ্রুত (Urgent) কার্ড নিতে চাইলে সামান্য ফি থাকতে পারে।

হ্যাঁ, এটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, বিদেশে পড়াশোনা, চিকিৎসা, পাসপোর্ট আবেদনসহ সকল সরকারি কাজে ব্যবহার করা যাবে।

হ্যাঁ, প্রথমবার নিবন্ধনের সময় পিতা বা মাতার একজনের উপস্থিতি প্রয়োজন হয়।

হ্যাঁ, বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করা সম্ভব। অনলাইনে প্রাথমিক আবেদন করে পরে দূতাবাসে বায়োমেট্রিক দিতে হয়।

না, ১৮ বছর পূর্ণ হলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় নাম যুক্ত হবে, তখন থেকেই ভোট দিতে পারবেন।

Similar Posts

Leave a Reply